বৃটেনের না আমেরিকার ইতিবাচক সাড়া
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকার ঘাটতি পূরণে এগিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তরফে বাংলাদেশকে ‘প্রয়োজনীয় সহযোগিতার’র বার্তা দেয়া হয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীল একটি সূত্র গতকাল মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র বলছে, চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট আচমকা টিকা রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে দ্বিতীয় ডোজের ঘাটতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে বাংলাদেশ। অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনকে দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের বাধ্যবাধকতায় সরকারসহ গোটা দেশই টিকার ঘাটতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, বাংলাদেশের হাতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে টিকা রয়েছে তাতে প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০টি টিকার ঘাটতি! উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেনসহ ইউরোপের একাধিক রাষ্ট্রের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা পেতে (সহায়তা কিংবা ক্রয়) অনুরোধপত্র পাঠায়। সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বৃটেন বা ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। বৃটিশ সরকারের তরফে অনানুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে অপারগতা প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে আশার দিক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ঘাটতি পূরণে ‘প্রয়োজনীয় সহযোগিতা’ প্রদানের একটি আশ্বাস মিলেছে। ঢাকা আশা করছে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কমপক্ষে ১০ লাখ এবং সর্বোচ্চ ১৫ লাখ পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া যেতে পারে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ওই টিকা পাওয়া যাবে। তবে ওই টিকা ওয়াশিংটন সরাসরি দিবে না ভোভেক্সের মাধ্যমে পাওয়া যাবে তা এখনও ঠিক হয়নি। চলমান টিকা কার্যক্রম এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকার ঘাটতি পূরণে সরকারের চেষ্টার বিষয়ে বিদায়ী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন- ‘এ বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের সেকেন্ড ডোজের বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত, আপনারাও চিন্তিত আছেন।’ মি. মালেক বলছিলেন, দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার কর্মসূচি আর এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন চলতে পারে। সে দিন তিনি একটি হিসাব দিয়ে বলেছিলেন বাংলাদেশে ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর প্রায় ৫৮ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছে। আর দু’টি ডোজই নিয়েছেন সাড়ে ৩৬ লাখের মতো মানুষ। গত ১৫ দিনে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যা দেখানো হয়েছে সর্বমোট ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬ জন দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে টিকার কোর্স সমাপ্ত করেছেন। সরকারের হাতে মোট ১ কোটি ৩ লাখ টিকা থাকার কথা বলা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তরফে বরাবরই ১ কোটি ২ লাখ টিকা হিসাবে প্রকাশ করা হয়। অ্যাস্ট্রাজেনেকার মোট ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকার হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের বাংলাদেশের হাতে টিকা রয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮শ’ ৪৯টি। আর টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা মানুষের সঙ্গে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৮শ’ ৭৯ জন। নতুন চালান না এলে মজুত থাকা টিকা প্রয়োগের পর ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০ জন মানুষ অপেক্ষায় থাকবেন!