প্রফেসর নোম চমস্কি স্যারের ইন্টারভিও বিতর্কে দেশ এখন উত্তাল। দেশের প্রতিযশা বুদ্ধিজীবী থেকে নিয়ে পাতি ফেসবুকজীবী পর্যন্ত সবাই তাঁদের ক্ষুরধার বিশ্লেষণের প্রমান রেখে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। বুদ্ধিভিত্তিক এ অগ্রগতি যেন সত্যিই চোখে পড়ার মতো। আসলেই কি তাই? এ ঘটনা যদি খোদ আমেরিকায় হতো মোটাদাগে অনেক মানুষ এই ছেলের সময় জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন করতো ঠিকই কিন্ত সেটা শুধু সময় জ্ঞান পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকতো। তার ব্যক্তিগত বা ভাষাগত যোগ্যতা পর্যন্ত কোনদিনই আসতো না।
যে ছেলে ইভেন্টটি হোস্ট করেছে তার চরম গাফিলতির জায়গা পরিস্কার। এ নিয়ে জোড় সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু এটাও সত্যি যে সে হয়তো চরম স্ট্রেসে ছিল। এবং সেটা থাকা খুব স্বাভাবিক।
একজন পাতি হোস্ট ও ইভেন্ট অরগানাইজার হিসেবে দেখেছি এ দেশের মানুষ পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালসদের কথা শুনতে খুব বেশি পছন্দ করে না। তারা শুনে ফেসবুক সেলিব্রেটিদের কথা। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শোনে। অবশ্য এখানেও দোষের কিছু নেই। দিন শেষে সুখি থাকাটাই সবচেয়ে জরূরী। সেটা যেভাবেই হোক।
এতো মিডিয়া কাভারেজ করার পরেও ইভেন্ট এর রেসপন্স ছিল ৮০০ এর মতো। বড়জোড় ৩০০ মানুষ সরাসরি ইভেন্টটা দেখতো। এই কাহিনী যদি না হতো এই ইভেন্টের ভিডিও হাজার খানেক মানুষও দেখতো না। হয়তো আপনিও দেখতেন না! এটাই তিক্ত সত্যি।
প্রফেসর চমস্কি একজন কিংবদন্তী বুদ্ধিজীবী। অনেকটা জীবিত আইন্সটাইন টাইপ। ভাষাবিজ্ঞানে তাঁর অবদান সবাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। উনার বিশালতার সামনে আমাদের প্রতিযশা বুদ্ধিজীবীরাও চুনোপুটি।
তো উনার সাথে এমন কিছু ঘটলে তার প্রতিক্রিয়া জোড়ালো হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার পরেও আমার কাছে বেশিরভাগ মানুষের পতিক্রিয়াকে ডিসপ্রপোরশনেট মনে হয়েছে। অনেককে দেখলাম তার প্রতি লাইনের ভুল ধরতে ব্যস্ত। মানে সব ভুল। ওর দুনিয়াতে আসাটাই যেন ভুল!
আপনি বড়জোড় তার টাইম সেন্স নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন তার বেশি কিছু না। আপনি বড়জোড় তাঁর প্রফেশনালিজম নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন তাঁর বেশি কিছু না। তার বেশি কিছু নিয়ে প্রশ্ন করা নেহায়েতই অনধিকার চর্চা বৈ আর কিছু নয়। সো মাচ সো যে এখন শুধু চমস্কি অধিকার সংরক্ষন পরিষদ গঠন করা বাকি আছে। তাও আছে কি?